Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পরিবেশ দূষণরোধে বৃক্ষের ভূমিকা ও আমাদের করণীয়

অজীব উপাদান, যেমন- মাটি, পানি, আলো, বাতাস, জলাশয়, হাওর, নদ-নদী, সাগর-মহাসাগর, পাহাড়-পর্বত, হিমবাহ, মরুভূমি, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, মেঘমালা, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি এবং সজীব উপাদান, যেমন- উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীব ইত্যাদির সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। এগুলোর সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ। এ পরিবেশের মধ্যে বিরাজ করছে মানব কর্তৃক সৃষ্ট পরিবেশ, যেমন- ঘরবাড়ি, গ্রাম-শহর, সুউচ্চ ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, সেতু, বাঁধ, মোটরযান, রেলওয়ে, উড়োজাহাজ, রকেট, স্টিমার, ইটভাটা, বিদ্যুৎ, শিল্পকারখানা, ইন্টারনেট, রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, জাহাজ-শিল্প, অস্ত্র-কারখানা, পারমাণবিক চুল্লি ইত্যাদি। অর্থাৎ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট উভয় পরিবেশের সমন্বয়েই সৃষ্টি হয়েছে আমাদের এ সুন্দর পরিবেশ। একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশের জন্য অজীব ও জীব প্রতিটি উপাদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভৌতিক, রাসায়নিক ও জৈবিক কারণে এ উপাদানগুলোর মধ্যে যে কোনো একটির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটলে সামগ্রিক পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে এবং পরিবেশ দূষণ হয়। মানুষের অসচেতনতা এবং অনিয়ন্ত্রিত আচরণের কারণেই পরিবেশ দূষণ হচ্ছে ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে উৎপাদিত ক্ষতিকারক পদার্থ, যেমন- গ্রিন হাউস গ্যাস, ইগজোস্ট গ্যাস, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, শিল্পকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, আর্সেনিকযুক্ত বর্জ্য, পারদ, ক্যাডমিয়াম, সিসা, বালাইনাশক, আগাছানাশক, ধোঁয়া, ধোঁয়াশা, ধূলিকণা, ময়লা-আর্বজনা ইত্যাদি মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ করে। গ্রিন হাউস ইফেক্টের কারণে বায়ুম-লের তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই গ্যাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড ৫০%, মিথেন ২০%, সিএফসি ১০%, নাইট্রাস অক্সাইড ১০% এবং অবশিষ্ট ১০% কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন পারঅক্সাইড ও কিছু অন্যান্য গ্যাস থাকে। গ্রিন হাউস হলো পুরু কাঁচের প্রাচীর দ্বারা নির্মিত একটি কাঁচঘর। শীত প্রধান এবং মরুর দেশে এ কাঁচের ঘর তৈরি করে কৃত্রিমভাবে তাপ, আলো ও জলীয়বাষ্প নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কৃষি গবেষণা/ফসল উৎপাদন করা হয়। ঠিক এ গ্রিন হাউসের কাঁচের প্রাচীরের মতো পৃথিবীকে ঘিরে বিদ্যমান গ্রিন হাউস গ্যাসগুলো সূর্যের পতিত তাপ বিকিরণে বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে বায়ুম-লের তাপ বৃদ্ধি করে। বায়ুম-লের তাপ বৃদ্ধির এ প্রক্রিয়াই হলো গ্রিন হাউস ইফেক্ট। বিজ্ঞানীদের ধারণা গ্রিন হাউস ইফেক্টের কারণে তাপ বৃদ্ধির ফলে শিগগিরই মেরু অঞ্চল ও পর্বতশ্রেণীর বরফ গলে সাগরের পানির উচ্চতা ১-২ মিটার বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে পৃর্থিবীর অধিকাংশ দ্বীপ সমুদ্রের লোনা পানির নিচে ডুবে যাবে এবং কোটি কোটি মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়বে ও প্রকট খাদ্য সঙ্কট দেখা দেবে। রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, পলিথিন, প্লাস্টিক ও রঙ তৈরির কারখানা থেকে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) গ্যাস নির্গত হয়। এ গ্যাস বায়ুম-লের ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে। এক অণু সিএফসি প্রায় দুই হাজার ওজোন অণুকে ধ্বংস করতে পারে। এ গ্যাস বৃদ্ধির কারণে ওজোন স্তরের অনেক স্থান পাতলা ও কোথাও কোথাও ছিদ্রও হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। ওজোন স্তর ছিদ্র হলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি এবং কসমিক রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে এসে প্রথমে ফাইটোপ্লাংটনসহ বিভিন্ন অণুজীব ও পরে উদ্ভিদ জগৎ ও প্রাণিকুলের মারাত্মক ক্ষতি করবে। এতে ক্যান্সার ও বিভিন্ন প্রকার রোগের প্রকোপ বেড়ে যাবে। সমগ্র বিশ্বে জৈব জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং শিল্পকারখানা থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) নির্গমণের কারণে বাতাসে এ গ্যাসের মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এসব CO2 সূর্যের বিকিরিত তাপের একটা অংশ আটকে রেখে বৈষ্ণয়িক উষ্ণায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। বিজ্ঞানীরা ৮টি শীর্ষ কার্বন নির্গমনকারী খাত চিহ্নিত করেছেন, যেমন- বিদ্যুৎ কেন্দ্র- ২১.৩%, শিল্প-কারখানা- ১৬.৮%, পরিবহন- ১৪%, কৃষি উপজাত- ১২.৫%, জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন প্রক্রিয়াজাত ও বিপণন- ১১.৩%, আবাসিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম- ১০.৩%, ভূমি ব্যবহার ও জৈব জ্বালানি- ১০% এবং বর্জ্য নিষ্কাশন ও পরিশোধন- ৩.৪%। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি CO2 নির্গমনকারী দেশগুলো হচ্ছে চীন, আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, ভারত, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ। চীন ও আমেরিকার কার্বন নির্গমনের পরিমাণ মোট নির্গমনের প্রায় ৫০ শতাংশ।


বিভিন্ন প্রকার যানবাহন থেকে নির্গত এগজোস্ট গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। এ গ্যাস তেলজাতীয় জ্বালানির দহন ক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয় এবং এতে সিসা, তামা, ক্যালসিয়াম, জিংকের ভারি ধাতু, CO, SO2, H2S, HCl I N - অক্সাইডগুলো থাকে। অপরদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর শিল্পকারখানা থেকে নির্গত নাইট্রোজেন ও সালফারের অক্সাইড গ্যাস বৃষ্টির পানির সাথে মিশে নাইট্রিক ও সালফিউরিক এসিডে রূপান্তরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে এসিড বৃষ্টি ঘটায়। এসিড বৃষ্টি উদ্ভিদ ও প্রাণীর ক্ষতি করে। মাটি ও পানির পিএইচ কমায়। পরিবেশ দূষণকারী উপাদানগুলো উৎপাদনে বাংলাদেশের ভূমিকা অতি নগণ্য। তবুও পরিবেশ দূষণের প্রভাব বাংলাদেশের ওপর বেশি পড়ছে। এ কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে এবং নাতিশীতোষ্ণ বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে চরমভাবাপন্ন দেশে পরিণত হচ্ছে। ভারসাম্যহীন পরিবেশের জন্য ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, খরা, প্রচণ্ড তাপ, অনাবৃষ্টি, অসময়ে বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি, বন্যা, নদী ভাঙন, ভূমিধস, লবণাক্ততা, শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। বৈষ্ণয়িক উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে প্রতি বছর সুনামি, সিডর, আইলা, মহাসেন ও নার্গিসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হওয়ায় ঘরবাড়ি, গাছপালা, মানুষ, গবাদিপশু, বন্যপ্রাণী, জলজপ্রাণী, মাঠের ফসল, পুকুর, হ্যাচারি, বাঁধসহ বিভিন্ন প্রকার স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের বিভিন্ন কারণ নিম্নে বর্ণিত হলো-


বায়ু দূষণ : বাতাসে অক্সিজেন ব্যতীত অন্যান্য গ্যাস ও ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ু দূষিত হয়। পৃথিবীর সব প্রাণী শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করে। অপর দিকে বৃক্ষরাজি কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ ও অক্সিজেন ত্যাগ করে। পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নির্বিচারে সবুজ বৃক্ষ নিধন করার কারণে বৃক্ষ হ্রাস পাচ্ছে। তাই পরিবেশের সবটুকু CO2 বৃক্ষরাজি শোষণ করতে পারছে না। ফলে বাতাসে CO2 এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও শিল্প-কারখানা, ইট ভাটার চিমনি এবং মোটরযান হতে নির্গত- ধোঁয়া, ধোঁয়াশা, বর্জ্য, এগজোস্ট গ্যাস, গ্রিন হাউস গ্যাস ইত্যাদি দ্বারা বায়ু দূষিত হচ্ছে। মানুষের শ্বাস গ্রহণের সময় দূষিত বায়ু দেহের মধ্যে প্রবেশ করে রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে যকৃত, অগ্নাশয় ও বৃক্কে ক্রমান্বয়ে জমা হয়। এর ফলে বমি, মাথাব্যথা, বুকব্যথা, নাক-মুখ জ্বালা, এজমা, এলার্জি, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, মানসিক অস্থিরতা, ক্যান্সার ইত্যাদি জটিল রোগের সৃষ্টি হয়।


পানি দূষণ : পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো সাধারণত জলাশয়ের সাথে যুক্ত থাকার কারণে শহর, হাট-বাজার, বাসাবাড়ির ময়লা-আর্বজনা, বিভিন্ন প্রাণীর মলমূত্র, খাল, বিল ও নদীতে পড়ে পানি দূিষত হচ্ছে। প্রতিটি শিল্পকারখানার সঙ্গে শোধনাগার বা অ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক। জাহাজ ভাঙা শিল্পের বর্জ্য ও খনি হতে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ পানি দূষণের একটি কারণ। ফসলের জমিতে মাত্রাতিরিক্ত বালাইনাশক ও আগাছা নাশক, হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বর্জ্য, হাওর, নদী এবং সাগরে চলাচলরত ইঞ্জিনচালিত নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমারের তেল নিঃসরণ এবং পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা ও বিস্ফোরণের কারণেও সাগরের পানি দূষিত হচ্ছে। দূষিত পানি ব্যাকটেরিয়া, ক্ষুদে জীব, কেঁচো, সাপ, ব্যাঙ, বিভিন্ন উপকারী প্রাণী, মাছ, জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদির মৃত্যু ঘটায় এবং কলেরা, টাইফয়েড, ডিসেন্ট্রি ও চর্ম রোগ ছড়ায়। বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বহনকারী ফসল এবং মাছ খেলে বন্ধ্যাত্ব, জন্মগত ত্রুটি, স্নায়ু-বৈকল্য, ক্লোন রেক্টাল, কিডনি সমস্যা, প্রষ্টেট, যকৃৎ, ফুসফুস, পাকস্থলী ক্যান্সার ও লিউকোমিয়া রোগ হয়। আর্সেনিকযুক্ত পানি চামড়া, লিভার ও কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে।


মাটি দূষণ : ট্যানারিসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার বর্জ্য, এসিড, বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য- খাল, বিল ও নদীর পানির সাথে ফসলি জমিতে ছড়িয়ে পড়ে মাটি দূষিত হচ্ছে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন- ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা ইত্যাদির কারণে অবকাঠামোগুলো ধ্বংস হয়ে কৃষি জমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে মাটি দূষিত হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত মাটিতে চাষযোগ্য লবণ সহিষ্ণু ফসলের জাত তেমন না থাকার কারণে শস্য উৎপাদনে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষ করা সম্ভব হলেও বাকি মৌসুমগুলোতে হাজার হাজার হেক্টর জমি লবনাক্ততার কারণে পতিত থাকছে। শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে লবণাক্ততার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ৪ থেকে ২০ ডিএস/মি. পর্যন্ত অবস্থান করছে। অধিক লবণাক্ততার জন্য মিঠা পানি সঙ্কটের কারণে ফসলের জমিতে সেচ কার্যক্রম সম্ভব হচ্ছে না।


শব্দ দূষণ : বাস-ট্রাক, রেলগাড়ি, লঞ্চ-স্টিমারের হাইড্রোলিক হর্নের শব্দ, বিমানের বিকট শব্দ, শিল্পকারখানার শব্দ, ইট-পাথর ভাঙার শব্দ, মাইকের শব্দ, পটকার শব্দ, হাটবাজার, যানজট, জনসভায় মানুষের কোলাহলের শব্দ, ঢাক-ঢোলের শব্দ, ঝড়-তুফান, সাইক্লোন, বজ্রপাত ও সমুদ্রের গর্জন শব্দ দূষণের উন্নতম কারণ। শব্দ দূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস, মাথাব্যথা, হৃদরোগ, স্নায়ুবিক বৈকল্য, শিশুর মানসিক বিপর্যয়, অনিদ্রা, বিরক্তিভাব, মনোযোগ নষ্ট ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।


কৃষি ক্ষেত্রে দূষণের প্রভাব : ফসলের উৎপাদন নির্ভর করে মাটি, বায়ু, পানি, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও আলোর প্রখরতার ওপর। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব সামগ্রিক কৃষি পরিবেশের ওপর পড়ছে। এ কারণে আগাম বন্যায় বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল পানির নিচে ডুবে যাচ্ছে। বন্যার স্থায়িত্বকাল দীর্ঘ হওয়ার কারণে আমন ধানসহ আন্যান্য ফসল চাষে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শিম, তরমুজ, টমেটো প্রভৃতি ফসলের ফুল ঝরে যাচ্ছে এবং শাকসবজি, আলু, সরিষা, পানের বরজ, বোরো ধানের চারাসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। নারিকেল, সুপারি ও কলাগাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে ছোট গাছগুলো মারা যাচ্ছে। মাঠের ফসল নানা ধরনের রোগ ও পোকামাকড় দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। এপ্রিল-মে মাসে প্রচণ্ড তাপের কারণে আম এবং লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে ও খোসা ফেটে পচন ধরে নষ্ট হচ্ছে। বিপন্ন আবহাওয়ার কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত ও ফলন হ্রাস পাচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।


ইকোসিস্টেম ও জীববৈচিত্র্য : উদ্ভিদ ও প্রাণী ওতোপ্রতভাবে জড়িত এবং এদের সমাবেশই হলো জীববৈচিত্র্য। ভূপৃষ্টে উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীব ও এদের জড় পরিবেশ নিজেদের মধ্যে এবং পরস্পরের মধ্যে ক্রিয়া-বিক্রিয়ার গতিময় পদ্ধতি হলো ইকোসিস্টেম বা পরিবেশতন্ত্র। মানুষসহ অধিকাংশ প্রাণীর খাদ্যের প্রধান উৎস বৃক্ষ। বৃক্ষ পশুপাখি, কীটপতঙ্গ ও অণুজীবের আশ্রয়স্থল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্বিচারে বন নিধন এবং প্রাণী শিকারের কারণে বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদ ও পশুপাখি বিলুপ্তির পথে। অতি সাধারণ প্রাণী, যেমন- শিয়াল, বেজি, খরগোশ, কাঠবিড়ালি, বানর, হনুমান, চিল, শকুন, ডাহুক, বাবুই, চড়–ইসহ আরও অনেক পশুপাখি আগের মতো দেখা যায় না। বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ ফাইটোপ্লাংক্টন, জুওপ্লাংক্টন, শৈবাল, ক্ষুদিপনা, টোপাপানা ইত্যাদি খায় এবং বড় বড় মাছ, কুমির ও অন্যান্য জলজ প্রাণী ছোট মাছগুলোকে খেয়ে বাঁচে। পানি দূষণ, জলাশয় সমস্যা এবং অবাধে শিকারের কারণে বহু ছোট-বড় নানা জাতের দেশি মাছ ও জলজ প্রাণী বিলুপ্তির পথে। মৌমাছিসহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ফুল থেকে মধু আহরণকালে পরাগায়নের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। অণুজীবগুলো মরা বৃক্ষ ও প্রাণীর কোষের জৈবপদার্থ খেয়ে বাঁচে এবং এসব মাটির সাথে পচিয়ে পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখে। বিভিন্ন জীবস্তরের মধ্য দিয়ে খাদ্যশক্তির এ প্রবাহকে খাদ্য শৃঙ্খল বা ফুড চেইন বলে। খাদ্য শৃঙ্খল ইকোসিস্টেমের গতিশীলতা বজায় রাখে।


বৃক্ষের ভূমিকা : খাদ্যের উৎস, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, চিত্তবিনোদন এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। বৃক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন প্রকার ফল, মিষ্টি রস, ভেষজ দ্রব্য, কাঠখড়িসহ অনেক মূল্যবান সম্পদ পাই। বিভিন্ন প্রকার ফল উৎপাদনে বৃক্ষের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ফল শারীরিক ও মানসিক পরিপূর্ণতা বিকাশ লাভে সহায়তা করে। বিভিন্ন প্রকার কাঠের ওপর ভিত্তি করে দেশে আসবাবপত্র তৈরির বৃহৎ শিল্প, যেমন- বনজ শিল্প, হাতিল, আকিজ, নাভানা, অটোবি ইত্যাদি এবং কাঠমিস্ত্রিদের দ্বারা ক্ষুদ্র ফার্নিচার শিল্প গড়ে ওঠেছে। সমগ্র বিশ্বে বৃক্ষভিত্তিক বৃহৎ শিল্প, যেমন- কাগজ, রাবার, রেয়ন, হার্ডবোর্ড, রেশম, চা, পামঅয়েল, কোকো ইত্যাদি এবং কুটির শিল্প, যেমন- আগর, রেজিন, লাক্ষ্মা, খয়ের, মধু, বাঁশ-বেত শিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটছে। তাল-খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি হয়। এ রসের ওপর ভিত্তি করে যশোর, ফরিদপুর, নাটোর, রাজশাহী অঞ্চলে গুড়ভিত্তিক গ্রামীণ শিল্পের প্রসার ঘটেছে। নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে গদি, জাজিম, পাপস, রশি, ব্রাশ, ঝাড়– এবং তাল-খেজুরের পাতা দিয়ে পাটি, থলে, বেড়া, ঘরের ছাউনি ও কাণ্ড ঘরের বর্গা-খুুঁটি তৈরিতে ব্যবহƒত হয়। শিমুলগাছের তুলা দ্বারা লেপ, তোষক, বালিশ, সুতা ইত্যাদি তৈরি হয়। বৃক্ষের ডালপালা ও পাতা জ্বালানির প্রধান উৎস। দুনিয়ার সব রোগের ওষুধ রয়েছে উদ্ভিদের মধ্যে। ভেষজ বৃক্ষের শেকড়, ছাল-বাকল, পাতা, ফুল, বীজ ও বিভিন্ন প্রকার ফল, যেমন- আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, অর্জুন, নিম ইত্যাদি আয়ুর্বেদিক/হারবাল/ইউনানি ওষুধ তৈরির প্রধান উপাদান। হেকিম ও কবিরাজরা ভেষজ ওষুধ দ্বারা সর্দি-কাশি, জ্বর, ব্যথা, হাড়ভাঙ্গা, আমাশয়, কৃমি, বাত, সাদা শ্রাব, সুতিকা, মেহ-প্রমেহ, ডায়াবেটিস, প্রেসার, জন্ডিস, পাইলস, একজিমা, দুধবাহারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করেন। ভেষজ ওষুধ দ্বারা গবাদি-পশুরও চিকিৎসা হয়। দেশে হামদর্দ, সাধনা, শক্তি, এপি, কুণ্ডেশ্বরীসহ বহু আয়ুর্বেদিক ওষুধ শিল্প গড়ে উঠেছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় মানুষের এসব ওষুধের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। হারবাল প্রসাধনীর প্রধান উৎস বৃক্ষ। অনেক গাছের পাতা-ছাল-শেকড়-বীজ দ্বারা জৈব বালাইনাশক তৈরি হয়। বহু মূল্যবান ঔষধি বৃক্ষ বিলুপ্তির কারণে ভেষজ পণ্য আমদানি করতে হয়। তাই ঔষধি বৃক্ষ সংরক্ষণের জন্য সরকারি উদ্যেগ একান্ত প্রয়োজন। বৃক্ষরাজি বাতাস থেকে CO2 শোষণ এবং অক্সিজেন (O2) ত্যাগের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। একটি বয়স্ক বৃক্ষ ১০ জন মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করে। বাতাস থেকে ৬০ পাউন্ডের অধিক বিষাক্ত গ্যাস শোষণ ও ১০টি এসির সমপরিমাণ তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। শত শত টন কার্বন শোষণের মাধ্যমে বায়ুর দূষণরোধ ও তাপদাহ দুপুরে প্রস্বেদনের মাধ্যমে বাতাসে প্রায় ১০০ গ্যালন পানি নির্গত করে পরিবেশ ঠা-া রাখে। বৃক্ষরাজি শব্দ দূষণও রোধ করে। এক হেক্টর পরিমাণ মাঝারি বন ১০ ডেসিবল শব্দ হ্রাস করতে পারে। সর্বোপরি সবুজ বৃক্ষের মনোরম দৃশ্য ও নির্মল বাতাস সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক পরিবেশ সব মানুষের চিত্তবিনোদনের আকর্ষণীয় উপাদান। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য যে কোনো দেশের ২৫% ভূমিতে বনজঙ্গল থাকা দরকার। বর্তমানে দেশে বনভূমির পরিমাণ সরকারিভাবে ১৭% উল্লেখ থাকলেও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে বাস্তবে রয়েছে ৮-১০% ভাগ। প্রতি বছর দেশে ১.৪৭% হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বসতি স্থাপন এবং শিল্পায়নের ফলে ১% হারে আবাদি জমির পরিমাণ হ্রাস ও ৩.৩% হারে বন নিধন হচ্ছে। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে নিম্নের বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা মানব সম্প্রদায়েরই করণীয়-


১. সড়কপথ, রেলপথের দু-ধার, পাহাড়, টিলা, উপকূলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা, নদ-নদী, খাল-বিলের পাড়, বাঁধ, বেড়িবাঁধ, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ির আশপাশে ফাঁকা জায়গায় প্রচুর পরিমাণে ফলদবৃক্ষ, যেমন- আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, কুল, আমড়া, জলপাই, পেয়ারা, আতা, সফেদা, কমলা, লেবু, বেল, কদবেল, ডাউয়া, করমচা, চালতা, জাম্বুরা, জামরুল, শরিফা, কামরাঙা, গোলাপজাম, তেতুল, সজনা, নারিকেল, সুপারি, তাল, খেজুর, পামঅয়েল, গোলপাতা ইত্যাদি, বনজবৃক্ষ, যেমন- সেগুন, মেহগণি, আকাশমণি, কড়ই, রেইনট্রি, বাবলা, গর্জন, শাল, চিকরাশি, শিশু, গামার, জারুল, দেবদারু, শিমুল, বট, পাকুর, খয়ের, হিজল, তরুল, চন্দন, কদম, ঘোড়ানিম, ছাতিয়ান ইত্যাদি ভেষজবৃক্ষ, যেমন- আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, অর্জুন, জাতনিম, নিশিন্দা, বাসক, শতমূল, অ্যালোভেরা, নয়নতারা, কালমেঘ, সর্পগন্ধা ইত্যাদি ও মসলাজাতীয় বৃক্ষ, যেমন- তেজপাতা, দারচিনি, গোলমরিচ, জায়ফল, আলুবোখারা, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম ইত্যাদি রোপণ করে বাগান ও সামাজিক বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে। ২. নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন বন্ধ এবং বৃক্ষ কর্তনের ওপর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। অবাধে পাহাড় কাটা, নদী ভরাট এবং বালু উত্তোলন রোধ ও আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। ৩. কাঠের ফার্নিচারের বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিক, লোহা ও স্টিলের তৈরি ফার্নিচার ব্যবহার করতে হবে। খড়ির বিকল্প হিসেবে চারকোল, গ্যাস, কয়লা ও ঘুটের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। উন্নত চুলায় কম ধোঁয়া নির্গমন ও অল্প খড়ির প্রয়োজন হয়। তাই এ চুলার ব্যবহার সম্প্রসারণ করতে হবে। ৪. যানবাহনে সীসামুক্ত জ্বালানি ও সিএনজি ব্যবহার করতে হবে। শিল্পকারখানা এবং ইটভাটার চিমনি অনেক উঁচু করে তৈরি ও ধোঁয়া নির্গমণ হ্রাস করতে হবে। বিষাক্ত বর্জ্য ও ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসাবে পাটজাত ও অন্যান্য পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করতে হবে। দূষণরোধে পলিথিন, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক বর্জ্য রিসাইক্লিনিংয়ের মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। ৫. শিল্পকারখানার বর্জ্য খাল, বিল ও নদীতে না ফেলে ইটিপি স্থাপনের মাধ্যমে শোধন করতে হবে। বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে ডাস্টবিনের ময়লা-আর্বজনা এবং জৈব বর্জ্য দ্বারা বায়োগ্যাস, বিদ্যুৎ ও জৈব সার উৎপাদন করতে হবে। বায়োটেকনোলজি প্রযুক্তির সাহায্যে সুপার ফানশনাল ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন করে বর্জ্য বা আবর্জনাকে দ্রুত পচনশীল করার মাধ্যমে সার্বিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ৬. উপকূলীয় অঞ্চলের বাঁধ, বেড়িবাঁধ, স্লুইস গেট এবং অন্যান্য স্থাপনাগুলো মজবুত করে তৈরি করতে হবে যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। লবণাক্ত পানি সহজে নিষ্কাশনের জন্য এক মিটার গভীর করে ড্রেন ও সাব ড্রেন তৈরি করতে হবে। জলাশয় তৈরি করে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে যেন এ পানি শুষ্ক মৌসুমে ফসলের জমিতে ব্যবহার করা যায়। ৭. কৃষি গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ফসলের শীত, তাপ, বন্যা ও লবণসহিষ্ণু নতুন জাত উদ্ভাবন এবং বালাইনাশক ও আগাছানাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।


পাশাপাশি জৈব কৃষির ওপর অধিক জোর দিতে হবে। ৮. নির্বিচারে বন্য ও জলজ প্রাণী শিকার বন্ধ করতে হবে। বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পদকে সংরক্ষণের জন্য অভয়ারণ্য, উদ্ভিদ উদ্যান, অভয়াশ্রম, শিকার সংরক্ষিত এলাকা ইত্যাদি সৃষ্টি এবং বন-জঙ্গল, জলাশয়, নদী, সাগর দূষণমুক্ত রাখতে হবে। ৯. পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা ও বিস্ফোরণ ঘটানো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ১০. শব্দ দূষণরোধে যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার বন্ধ ও বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপন্ন হওয়া শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ১১. শিল্পকারখানার সঙ্গে ইটিপি না থাকা দ-নীয় অপরাধ। তাই যেসব শিল্পকারখানার সঙ্গে ইটিপি নেই, সেগুলোর ওপর পরিবেশ দূষণের জন্য গ্রিনট্যাক্স বা দূষণকর আরোপ ও ইটিপি স্থাপনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। ১২. নিয়মিত Air Monitoring এর মাধ্যমে বায়ুদূষণের উপাদানগুলোর পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে। ১৩. বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোই বেশি দায়ী।


তাই ক্ষতিপূরণ হিসেবে এ দেশগুলোর ওপর গ্রিনট্যাক্স, কার্বনট্যাক্স কার্যকর করে একটি অর্থ তহবিল গঠনের মাধ্যমে বিশ্ব পরিবেশ উন্নয়নে ওই অর্থ দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা দিতে হবে। পাশাপাশি পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষকে অন্তত একটি বৃক্ষ চারা রোপণ ও পরিচর্যা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সর্বোপরি শিল্পায়ন বিশ্বকে করেছে অনেক উন্নত ও আধুনিক। তাই শিল্পায়নের অগ্রগতি বজায় রেখেই বিশ্ববাসীকে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়তে উদ্বুদ্ধ এবং পরিবেশবাদী সংগঠন ও মিডিয়াগুলোকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

কৃষিবিদ এস. এইচ. এম গোলাম সরওয়ার*

* ডেপুটি চিফ ফার্ম সুপারিনটেনডেন্ট (পিএইচ. ডি স্টুডেন্ট), খামার বিভাগ, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর- ০১৭১৩১৬৩৩৬৫

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon